টবে বেগুন চাষের পদ্ধতি
এটেঁল দো-আঁশ ও পলি দো-আঁশ মাটি বেগুন চাষের জন্য বেশী উপযুক্ত মাটি। এই মাটিতে বেগুন চাষ ভাল হয়। বেগুনের ফলন বেশি পাওয়ার জন্য প্রথমে ভাল বীজ সংগ্রহ করে বীজতলায় চারা করে পরে তা টবে বা ড্রামে রোপণ করতে হবে। টবে চারা উৎপাদনের জন্য বীজতলা হিসেবে কাঠের বাক্স, প্লাস্টিকের ট্রে,গামলা ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। বীজতলায় পানি জমলে যাতে দ্রুত বের হতেপারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। বীজ বপণের একমাস পর বেগুনের চারা লাগানো যায়। চারা রোপণের টবগুলো জৈবসার মিশ্রিত বেলে দো-আঁশ মাটি দিয়ে ভরাট করতে হবে । তারপর ঐ পাত্রে বেগুনের চারা লাগানো যেতে পারে ।
বেগুনের যেসব রোগ হয় তার অধিকাংশ রোগই বীজ বাহিত। তাই বীজ বপনের আগে বীজ গুলো ছত্রাকনাশক দ্বারা শোধন করে নিতে হবে।বীজতলা থেকে চারা উঠানোর কয়েকঘন্টা আগে বীজতলায় পানি দিতে হবে। ফলে চারা উঠানোতে সহজ হবে। চারা তোলার সময় খেয়াল রাখতে হবে চারার শিকড় যেন অতিরিক্ত কাটা না পড়ে । বীজতলার চারা তোলার ১৫-২০দিন পূর্বেই চারা গাছ লাগানোর প্রস্তুতিমূলককাজ সারতে হবে । টবে কোন ছিদ্র থাকলে তা বন্ধ করতে হবে । এইবার এঁটেল দোআঁশ বা পলি দোআঁশ মাটি, গোবর, টি,এস,পি সার, পটাশ সার, পরিমাণ মতো একত্রে মিশিয়ে ড্রাম বা টবে ভরে পানিতে ভিজিয়ে় রাখতে হবে ১০-১২ দিন । তারপর মাটি কিছুটা খুচিয়ে দিয়ে আবার ৪-৫ দিন এভাবেই রেখে দিন । মাটি ঝুরঝুরে হলে তখন বেগুনের চারা উক্ত টবে লাগানো যাবে।
কিভাবে চারা লাগাতে হবে
বিকালে চারা লাগানো ভাল । চারা গাছটিকে সোজা করে লাগাতে হবে ।গাছের গোড়ায় মাটি কিছুটা উচু করে দিতে হবেযাতে গাছের গোড়া দিয়ে বেশী পানি ঢুকতে না পারে । গাছটি একটু বড় হলে সোজা কাঠি দিয়েগাছটিকে বেধে দিতে হবে । যাতে করে গাছটি টবের নিচে নুয়ে না পড়ে।চারা লাগানোর পর প্রথমদিকে পানি কম দিতে হবে।
সার প্রয়োগ পদ্ধতি ও সারের পরিমাণ
বেগুন চাষের জন্য গোবর, কম্পোস্ট সার,ইউরিয়া , টিএসপি, এমওপি, জিপসাম পরিমাণ মতো দিতে হবে।১ম কিস্তি চারা লাগানোর ১০-১৫ দিন পর, ২য় কিস্তি ফল ধরা আরম্ভ হলে এবং ৩য় কিস্তি ফল আহরণের মাঝামাঝি সময় দিতে হবে।
বেগুন গাছের পরিচর্যা
টবের মাটিতে আগাছা হলে নিড়ানি দিয়ে উপড়ে ফেলতে হবে এবং কিছু দিন পর পর মাটি আলগা করে দিতে হবে। মাটি কিছুটা আলগা করে দিলে গাছের শিকড় তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায় । বেগুন গাছে বেগুন ধরা শুরু করলে খৈল পচা পানি পাতলা করে গাছে দুই-তিন সপ্তাহ পর পর দিলে ভাল হবে।
বেগুনের রোগবালাই ও প্রতিকার
বেগুনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পোকা হলডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা । তাছাড়াও আরও কিছু পোকা বেগুনের জন্য ক্ষতিকর। যেমন- জাবপোকা, বিছা পোকা, ও লাল মাকড়সা । বেগুন গাছের রোগবালাইয়ের মধ্যে গোড়া পচা রোগ ফল পচা রোগ বেশি দেখা দেয় । বেগুনের রোগবালাই এবং পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে মাঝে মাঝে বেগুন গাছে উপযুক্ত কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করা।
Reviews
There are no reviews yet.