কুসুম ফুল
কুসুম ফুল একটি বর্ষজীবি উদ্ভিদ। লম্বায় এটি ১-৩ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। কমলা-হলুদ রংয়ের ফুলগুলি প্রায় ১ থেকে ১.৫ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। কুসুম ফুলের ইংরেজি নাম Safflower, False Saffron ইত্যাদি এবং বৈজ্ঞানিক নাম Carthamus tinctorius.
কুসুমগাছ দুই ধরনের- একটি বেশ বড় এবং উঁচু, অন্যটি খুবই ছোট ও ঝোপালো ধরনের। মূলত ছোট গাছ থেকেই রং পাওয়া যায়। কুসুম ফুল গ্রীষ্মে ফোটে। এরা পরিত্যক্ত মাঠ কিংবা ঘাসবনে আপনা আপনিই জন্মে। তাছাড়া কুসুম ফুল নদীর তীরে, পাহাড়ের ঢালে, কৃষিজমিতে, বসতবাড়িতে এমনকি টবেও লাগানো যায়।
ঐতিহ্যগতভাবে মুলতঃ বীজের জন্যই কুসুম ফুলের চাষ করা হয়। এর বীজ খাদ্যদ্রব্য রঙিন ও সুঘ্রাণযুক্ত করতে এবং ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া এর বীজ থেকে তেল ও সংগ্রহ করা হয়।
অনেক সময় মশলা হিসেবে জাফরানের পরিবর্তে কুসুম ফুল ব্যবহার করা হয়। পৃথিবীর বহুদেশে এটাকে জাফরান নামে বিক্রি করে ঠকানো হয়। মসলা হিসাবে এটার কোন মূল্য নাই কিন্তু রং করার ক্ষমতার কারণে অনেক সময় অনেকে ধোঁকা খায়।
কাপড়ের রং হিসেবে কুসুম ফুল অনেক পুরোনো ও বিখ্যাত। কৃত্রিম রং আবিষ্কারের পূর্বে কাপড়-চোপড় রং করতে পাকা রং হিসেবে কুসুম ফুল বিগত পঞ্চাশ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রাচীন মিসরেও এর চাষ হতো।
কুসুম ফুলের কিছু ঔষধি গুনাবলীও রয়েছে। গরম পানিতে এর নির্যাস শরীর থেকে ঘাম নির্গত করে বলে ঠান্ডাজনিত রোগশোকে ব্যবহৃত হয়। শিশু জন্মের পর এর বীজের পাউডার একটা কাপড়ে নিয়ে গরম করে সেঁক দিলে ব্যথা উপশম হয়। এর ফুল আবার জন্ডিসের জন্য উপকারী। বর্তমানে জিন প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশেষ প্রজাতির কুসুম ফুলের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে যার থেকে ডায়াবেটিসের মহৌষধ ইনসুুলিন উৎপাদন করা হবে।
Reviews
There are no reviews yet.